বুধবার ১৩ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

শিল্পপ্রেমীদের অনন্য শহর ইস্তানবুল

  |   বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   54 বার পঠিত

শিল্পপ্রেমীদের অনন্য শহর ইস্তানবুল

শিল্পপ্রেমীদের অনন্য শহর ইস্তানবুল

ইস্তানবুল তুরস্কের সবচেয়ে বড় শহর। দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর এ শহরেই। প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান, সর্বকালেই পৃথিবী বিখ্যাত শহর এটি। এর ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, বিশ্বখ্যাত বাইজেন্টাইন ও অটোমান সাম্রাজ্য দুটিরই রাজধানী ছিল ইস্তানবুল। ইউরোপ-এশিয়ার মিলনও হয়েছে এ শহরে। ভিন্ন মত ও সংস্কৃতির মানুষের সহাবস্থান এখানকার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। শহরটির খ্যাতির শেষ নেই। চিত্রশিল্প ও জাদুঘরপ্রেমীদের আকর নগরও এটি।ইস্তানবুল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও দর্শনীয় গ্যালারি, জাদুঘর, এ-সংশ্লিষ্ট বিকল্প স্থান এবং শিল্পজগতের অন্যান্য আকর্ষণে পরিপূর্ণ। এ যেন শিল্পজগতের আড্ডা এবং এ বিষয়ে দেখা-জানার উপভোগ্য পসরা।

গ্যালারি

ইস্তানবুলে শিল্প-সংস্কৃতি প্রদর্শনীর জন্য প্রায় ৫০টি গ্যালারি রয়েছে। এর সবক’টিই তুলনামূলকভাবে নতুন। এর মধ্যে সবচেয়ে পুরনোটি ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত। এগুলোর বেশির ভাগই স্থানীয় প্রতিভাবান তরুণ ইউরোপীয় শিল্পীদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। টু ভানা কিলিক ইস্তানবুলের সমসাময়িক আর্ট প্রদর্শনী আয়োজন ও পরিচালনা করেন। তিনি মনে করেন, ইস্তানবুল এমন একটি বিশ্বজনীন শহর যে এখানে যা-ই আয়োজন হোক না কেন, তাতে আন্তর্জাতিক অনুভূতি পাওয়া যায়।

পেরা, গালাতা ও তাকসিম: ইস্তানবুলের বেয়োগলু জেলায় গ্যালারির অবস্থান বেশি। এখানে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে, যেমন ‘ইস্তিকলাল এভিনিউ, ‘আইকনিক গালাতা টাওয়ার’ এবং শপিং ও বিনোদন কেন্দ্র ‘তাকসিম স্কয়ার’। এটি এতই ব্যস্ততম এলাকা যে চলতি পথে কোনো গ্যালারি, বইয়ের দোকান বা বুটিক শপের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়া অস্বাভাবিক নয়।

আনা লাউডেল: এক দশকেরও বেশি সময় আগে তাকসিম স্কয়ারের কাছের একটি স্থানে আনা লাউডেলের নামে প্রতিষ্ঠিত একটি গ্যালারি। লাউডেলের তরুণ প্রতিভার প্রতি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির কারণে গ্যালারিটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং আগ্রহীদের গন্তব্যস্থলে পরিণত হয়েছে।

গ্যালারিস্ট: এটি উনিশ শতকের অটোমান নৌবাহিনীর একটি ভবনে অবস্থিত, যা তুরস্কের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শিল্পীদের প্রশংসিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত গ্যালারি। গ্যালারিটি এমন নারী শিল্পীদের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে যারা স্পর্শকাতরতা এবং দেহের ওপর গবেষণা করেন, বস্তুগতভাবে সমৃদ্ধ এবং আখ্যানকেন্দ্রিক শিল্প প্রদর্শন করেন।

জিলবারম্যান গ্যালারি: বিশ্বব্যাপী শিল্প মেলায় উপস্থিতির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ গ্যালারি, যার মধ্যে রয়েছে এক্সপো শিকাগো, আর্ট বাসেল হংকং ও জোনা ম্যাকোর সাম্প্রতিক সংস্করণগুলোর উপস্থিতি। এটি স্থানীয় সদর দপ্তর ইস্তিকলাল এভিনিউয়ের প্রিয় ভবন মিসির অ্যাপার্টমানিতে অবস্থিত। দুই দশক ধরে গ্যালারি, পরীক্ষামূলক থিয়েটার এবং ডিজাইন অফিসের কেন্দ্রস্থল এটি।

সারাটরিয়াম: এটি স্থানীয় শিল্পীদের, যেমন ইয়াগিজ ওজগেন, কেরেম ওজান বায়রাক্টার ও জেইনো পেকুন্নু, লুডোভিক বার্নহার্ড, ক্রিশ্চিয়ান পেশেক ও ক্লেমেন্স ওল্ফের মতো আন্তর্জাতিক নামি শিল্পীদের সঙ্গে নিজেদের শিল্পকর্ম তুলে ধরে যারা বিমূর্ততা, দেহ ও প্রযুক্তি নিয়ে বিস্তৃতভাবে কাজ করেন। গ্যালারিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মেলায় প্রদর্শিত হওয়ার জন্য পরিচিত। এছাড়া ইস্তানবুল শহরের অন্যান্য গ্যালারির মধ্যে রূপক চিত্রকর্মের জন্য প্রখ্যাত ‘গ্যালারি ৭৭’ স্থানীয় ও বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী বিভিন্ন শিল্পীর প্রতিনিধিত্বকারী ‘ডিরিমার্ট’ অন্যতম।

জাদুঘর

ইস্তানবুলের আধুনিক ও সমসাময়িক জাদুঘরগুলো মূলত প্রভাবশালী পরিবারগুলো দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। এগুলো জনহিতকর কাজ, ভ্রমণ প্রদর্শনী, দ্বিবার্ষিক অনুষ্ঠান এবং তহবিল অনুদানকে সমর্থন করার জন্যও প্রসারিত।

ইস্তানবুল মডার্ন: তুরস্কের প্রথম ও সবচেয়ে প্রভাবশালী সমসাময়িক জাদুঘর। এটি ২০০৪ সালে চালু করা হয়। সম্প্রতি রেঞ্জো পিয়ানো-নকশাকৃত ভবন দিয়ে পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে। উঁচু স্থানের এ জাদুঘর পরিদর্শন করলে দেশের আধুনিক শিল্প-ইতিহাসের ওপর গুরুত্বপূর্ণ ধারণা পাওয়া যায়।

আর্টার: আর্টারকে শহরের সেরা সমসাময়িক শিল্প জাদুঘর” বলে মনে করা হয়। জাদুঘরটি বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী সংগ্রাহক ওমের কোচ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহশালায় সমৃদ্ধ। এখানে অটোমান প্রাচীন নিদর্শন থেকে শুরু করে থিয়েস্টার গেটসের কাজ পর্যন্ত রয়েছে।

পেরা জাদুঘর: এ জাদুঘর ১৮৯৩ সালে হোটেল ব্রিস্টল নামে চালু করা হয়। ফ্রিদা কাহলো, অ্যান্ডি ওয়ারহল, আলবার্তো গিয়াকোমেটি, জোয়ান মিরো, এটেল আদান এবং আরো অনেকের একক চিত্তাকর্ষক প্রদর্শনী হয় এখানে। এতে অটোমান যুগের জিনিসপত্র ছাড়াও ইউরোপীয়, বিশেষ করে প্রাচ্যবিদদের চিত্রকর্মের একটি চিত্তাকর্ষক সংগ্রহ রয়েছে। সংগ্রহের মূল্যবান সম্পত্তি সম্ভবত ওসমান হামদি বের ১৯০৬ সালের চিত্রকর্ম ‘দ্য টর্টয়েস ট্রেইনার’, যা ২০০৪ সালে ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলারে অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, যা সে সময়ে একজন তুর্কি শিল্পীর আঁকা চিত্রকর্মের জন্য সর্বোচ্চ অর্থ দেয়া হয়েছিল। জাদুঘরের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে সমসাময়িক শিল্পীরাও অন্তর্ভুক্ত।

সল্ট: এটি ২০১১ সালে ন্যাশনাল ব্যাংক গ্যারান্টি প্রতিষ্ঠা করে। রুচিশীল ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ব্যাংক গ্যারান্টি তার আন্তঃবিষয়ক পদ্ধতি, স্বাগতপূর্ণ অভ্যন্তরীণ নকশা ও গতিশীল অনলাইন প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে একটি সাংস্কৃতিক ল্যান্ডমার্ক হয়ে উঠেছে। এর দুটি অংশ রয়েছে—একটি গালাটায়, যা সাবেক ইম্পেরিয়াল অটোমান ব্যাংকের সদর দপ্তরে এবং আরেকটি বেয়োগলুতে।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইস্তানবুলে দর্শক ও আগ্রহীরা আসেন চিত্রকর্ম, শিল্পকর্ম ও বিভিন্ন নিদর্শন দেখতে। প্রতিদিনই গ্যালারিতে চলে নানা আর্ট এক্সিবিশন। আধুনিক শিল্পকর্ম নিয়েও নিয়মিত কাজ হয় এ শহরে।

 

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

bankbimarkhobor.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

[abm_bangladesh_map]
advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
মোঃ ইসলাম শেখ
কার্যালয়

৭৯, সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোড, (৩য় তলা, বাম দিক), সিদ্ধেশ্বরী, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭

01760742336

[email protected]