বৃহস্পতিবার ১৪ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

ডলার সংকট, নেই রপ্তানির সুসংবাদও

অর্থনীতি ডেস্ক   |   মঙ্গলবার, ০২ জানুয়ারি ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   75 বার পঠিত

ডলার সংকট, নেই রপ্তানির সুসংবাদও

সংগৃহীত ছবি

দীর্ঘদিন ধরে দেশে চলছে ডলার সংকট। এ সংকট উত্তরণের অন্যতম উৎস রপ্তানি আয়। কিন্তু সেখানে নেই সুসংবাদ। কারণ, চলতি অর্থবছরে অক্টোবর-নভেম্বরের পর ডিসেম্বর মাসেও রপ্তানি আয় কমেছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাস পণ্য রপ্তানি বেড়েছিল। কিন্তু এরপর থেকেই ধারাবাহিক কমছে। গেল অক্টোবর রপ্তানি আয় কমে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ হয়েছে। পরের মাস নভেম্বরে কমেছে ৬ শতাংশ। সর্বশেষ গত মাস, অর্থাৎ ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় কমেছে এক দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।

ডিসেম্বর মাসে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫৩০ কোটি ডলারের, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম এবং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এক দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কম।

মুদ্রানীতিতে পরিবর্তন আনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

এর আগে চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে ৪৫৯ কোটি, আগস্টে ৪৭৮ কোটি এবং সেপ্টেম্বরে ৪৩১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়।

সবমিলিয়ে গত জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ২ হাজার ৭৫৪ কোটি ডলার। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় মাত্র দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি। তবে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ কম। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানির লক্ষ্য ঠিক করা ছিল তিন হাজার ১১ কোটি ডলার।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

ইপিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে তৈরি পোশাক ছাড়া অধিকাংশ পণ্যের রপ্তানি কমেছে। এর মধ্যে রয়েছে হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য ইত্যাদি।

চলতি অর্থবছরে রপ্তানি আয় ৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল। ওই সময় প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলার। ইপিবির তথ্য অনুসারে— ডিসেম্বর শেষে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পণ্য রপ্তানি সাড়ে ৮ শতাংশের বেশি পিছিয়ে আছে।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশের রপ্তানি পণ্যের প্রধান খাত তৈরি পোশাক খুব ভালো আয় করতে পারেনি। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে দুই হাজার ৩৩৯ কোটি ডলার সমপরিমাণ মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এক দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ কম।

ছয় মাসে পোশাক রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ছিল দুই হাজার ৫৩৯ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে নিট পোশাকের রপ্তানি ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। তবে ওভেন পোশাক রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ১২ শতাংশ।

তৈরি পোশাকের বাইরে গত ছয় মাসে রপ্তানি তালিকার শীর্ষে থাকা পণ্যের রপ্তানিও কমেছে। গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ১০ দশমিক ২৪ শতাংশ। চামড়া ও চামড়া পণ্যের রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৮ শতাংশ কম হয়েছে। এ ছাড়া, হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি কমেছে ৩৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এ ছাড়া, আরো অনেক পণ্যের রপ্তানি কমার প্রবণতার মধ্যে রয়েছে। অবশ্য কৃষি পণ্যের রপ্তানি চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ২ দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়েছে এবং প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি ১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়েছে।

খোলা বাজারে ডলারের জন্য হাহাকার

পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) পরিচালক ও মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি চাপে পড়েছে। বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে পোশাকের চাহিদা কমে গেছে। এ কারণে আমাদের দেশে আগের মতো ক্রয় আদেশ আসেনি। এ ছাড়া, পোশাকের মূল্য কম ছিল।

সবমিলিয়ে রপ্তানি আয় কমেছে বলে জানান ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল।

মূলত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার উৎসের কয়েকটি খাত রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম রপ্তানি, প্রবাসী আয় এবং বৈদেশিক ঋণ, বিনিয়োগ বা অনুদান। প্রবাসী আয় ও রপ্তানি বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ বাড়ে, যা আন্তর্জাতিক লেনদেনে দেশের সক্ষমতা বাড়ায়।

মহামারি করোনার পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর থেকেই বিশ্ববাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানির খরচ ব্যাপকভাবে বাড়ে। এতে দেশে তীব্র ডলার সংকট সৃষ্টি হয়। দ্রুত বাড়তে থাকে বৈদেশিক মুদ্রার দাম। বর্তমানে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দামে প্রবাসী ও রপ্তানি আয়ের ডলার কেনার কথা এবং আমদানিতে ডলারের আনুষ্ঠানিক দর ১১০ টাকা। তবে ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্সের ডলার কিনছে ১২৩ টাকা পর্যন্ত ধরে এবং আমদানিকারকদের কাছে প্রতিটি ডলার বিক্রি করছে ১১৫-১২০ টাকায়।

এমন পরিস্থিতিতে ডলারের চাহিদা সামাল দিতে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস (জুলাই-ডিসেম্বর) সময়ে ৬৭০ কোটি (৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সময়ে বাণিজ্যিক কিছু ব্যাংক থেকে এক বিলিয়ন ডলারের মতো অর্থ কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:১৯ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০২ জানুয়ারি ২০২৪

bankbimarkhobor.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

[abm_bangladesh_map]
advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
মোঃ ইসলাম শেখ
কার্যালয়

৭৯, সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোড, (৩য় তলা, বাম দিক), সিদ্ধেশ্বরী, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭

01760742336

[email protected]