বৃহস্পতিবার ১৪ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ঋণ পরিশোধ

অর্থনীতি ডেস্ক   |   বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   52 বার পঠিত

বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ঋণ পরিশোধ

সংগৃহীত ছবি

উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানোর পাশাপাশি বাজারে তারল্য কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ঋণ বেড়েছে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে থাকা ঋণ পরিশোধ করছে।

চলতি অর্থবছরের ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকার ২৯ হাজার ৪৯ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। একই সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে শোধ করেছে ২৯ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের ঋণস্থিতি গত অর্থবছরের তুলনায় কমেছে ১০৫ কোটি টাকা।

গত অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ১ লাখ ২২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি সরবরাহ করে রেকর্ড ৯৭ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সরাসরি ঋণ দেওয়ার মানে নতুন টাকা ছাপানোর মতো। এ প্রবণতা মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দেয়। যে কারণে বেশ আগে থেকে এভাবে ঋণ সরবরাহ না করার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন অর্থনীতিবিদরা। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যুক্তি দেখিয়ে আসছিল, ডলার বিক্রির বিপরীতে বাজার থেকে টাকা তোলা হচ্ছে। এর বিপরীতে বাজারে টাকার সরবরাহ না বাড়ালে সংকটে পড়বে ব্যাংক খাত। ব্যবসায়ীদের সুবিধার কথা বলে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে বেঁধে দেওয়ার অবস্থান থেকেও সরেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

চলতি অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নিট ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। তবে এখন পর্যন্ত সরকার যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছে, পরিশোধ করেছে তার চেয়ে বেশি। যে কারণে ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের মোট ঋণস্থিতি কমে ১৮ অক্টোবর শেষে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকায় নেমেছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের ঋণ ২৯ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা কমে ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আর বাণিজ্যিক ব্যাংকে ২৯ হাজার ৪৯ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা।

ব্যাংকাররা জানান, সুদহার ৯ শতাংশে আটকে রাখায় ব্যবসায়ীরা সুবিধা পেলেও ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশের মানুষ। সরকারি হিসেবেই দীর্ঘদিন ধরে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কাছাকাছি। গত বছরের শুরু থেকে মূল্যস্ফীতি অনেক বাড়লেও সুদহার বেঁধে রাখায় আমানতের সুদ নেমে যায় ৫ শতাংশের নিচে। মূল্যস্ফীতির তুলনায় আমানতের সুদ অর্ধেকেরও নিচে থাকায় সঞ্চয় নিরুৎসাহিত হয়েছে। নানা উপায়ে মূল্যস্ফীতি চাপিয়ে রাখার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় এখন নির্বাচনের আগে একবারে সুদহার বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন ব্যবস্থার কারণে ঋণের সুদহার বেড়ে প্রায় ১১ শতাংশে উঠেছে। এরই মধ্যে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে। ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ২ শতাংশীয় পয়েন্টের বেশি বেড়ে এখন ১০ শতাংশে উঠেছে। আবার ডলার বিক্রির বিপরীতে বাজার থেকে টাকা তোলার ধারা অব্যাহত আছে। এমন বাস্তবতায় ঋণের পাশাপাশি এখন আমানতের সুদও বাড়াতে হচ্ছে। অনেক ব্যাংক এখন ৯ শতাংশ পর্যন্ত সুদে আমানত নিচ্ছে। আগামীতে ঋণ ও আমানতের সুদ আরও বাড়বে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত ৪৩০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর বিপরীতে বাজার থেকে উঠে এসেছে ৪৭ হাজার কোটি টাকার বেশি। আর সংকট শুরুর পর ২০২১ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত বিক্রি করা

হয়েছে ২ হাজার ৫৫০ কোটি ডলারের মতো। এর বিপরীতে উঠে এসেছে আড়াই লাখ কোটি টাকার ওপরে। এখন অনেক ব্যাংকের হাতে ঋণ দেওয়ার মতো তহবিল নেই। আবার সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোও আন্তঃব্যাংক থেকে ধার না পেয়ে ছুটছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল আন্তঃব্যাংকে মাত্র ৪ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। অথচ গত মাসের শুরুর দিকে আন্তঃব্যাংকে দৈনিক ধারের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ অবস্থায় চরম সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রচুর তারল্য সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। গত সোমবার ব্যাংকগুলোকে ১৬ হাজার ৯১ কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়। আগের দিন রোববার ধারের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা। গত বৃহস্পতিবার দেওয়া হয় ১২ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধার দেওয়া কমিয়ে আনবে বলে এরই মধ্যে ব্যাংকগুলোকে ইঙ্গিত দিয়েছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৩

bankbimarkhobor.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

[abm_bangladesh_map]
advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক
মোঃ ইসলাম শেখ
কার্যালয়

৭৯, সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোড, (৩য় তলা, বাম দিক), সিদ্ধেশ্বরী, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭

01760742336

[email protected]